মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় জেনে নিন
মানুষের সৌন্দয্যের কোনো মাপকাঠি হয় না। সবাই সবার মতো করে নিজেদের কাছে সুন্দর। কিন্তু কম বেশি সবাই চায় যে নিজেকে একটু সুন্দর দেখাক।
তাই অনেক মানুষ নিজের এই স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য পার্লার বা দামী প্রসাধনীর পিছনে অনেক টাকা খরচ করেন। কিন্তু অনেক সময় এই কসরত বিফলে হয়ে যায়।
তাই আপনার সময় ও টাকা নষ্ট না করে ঘরোয়া উপায়ে নিজের ত্বকে উজ্জ্বল করুন। আমাদের হাতের কাছেই আছে এমন অনেক জিনিস যা দিয়ে আমরা নিজেদের ত্বকের যত্ন নিতে পারবো এবং ত্বক উজ্জ্বলতা করতে পারবো।
চলুন তাহলে এক নজরে দেখে নেই ঘরোয়া উপায়ে ত্বক উজ্জ্বলতার রহস্য।
মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়
অনেক সময় সান ট্যানের জন্য আমাদের চেহারা কালো হয়ে যায়। যার কারণে আমাদের কালো দেখায়। কিন্তু এই সান ট্যানের সমস্যার একটা সমাধান আছে। সান ট্যানের সমস্যা দূর করতে টমেটো সাহায্য করে। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন যা কালো ত্বক উজ্জ্বল করে।
মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতায় হলুদ
আদিযুগ থেকে রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে হলুদ। আমাদের ত্বকের হাজার সমস্যা দূর করতে হলুদ অনেক সাহায্য করে। আপনি যদি নিয়মিত হলুদ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন। তাই সপ্তাহে এক অথবা দুইদিন হলুদ ব্যবহার করুন।
মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতায় বেসন
আমদের ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য বেসনও অনেক সাহায্য করে। কিন্তু যাদের ত্বকে শুষ্কতার সমস্যা আছে তারা শুধু বেসন ব্যবহার করবেন না, সাথে কয়েক ফোটা মধু বা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করবেন। তাহলে কয়েক সপ্তাহে নিজের ত্বকের উজ্জ্বলতা দেখতে পাবেন।
মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতায় অ্যালোভেরা
আমরা প্রায় অনেকেই জানি ত্বকের টান দূর করে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে অ্যালোভেরা অনেক উপকারি। তাই রোদ থেকে ফিরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর মুখে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে নিন। তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতার পার্থক্য।
মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতায় টকদই
আপনি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে টকদই ব্যবহার করে দেখতে পারেন। টকদই ব্যবহার করার ফলে ত্বক পরিষ্কার হয়। আপনি চাইলে টকদই ও কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন এতে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম ত্বকের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের সময় ত্বক নিজেকে মেরামত করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে। গভীর ঘুম ত্বকের কোষগুলিকে পুনর্জীবিত করতে এবং ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
পানিশূন্যতা দূর করুন
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। পানি ত্বকের কোষগুলিকে হাইড্রেটেড রাখে এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে। ত্বক শুষ্ক হলে তা ঠাকা, ফাটা এবং শিথিল দেখায়।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য
প্রচুর ফল, শাকসবজি, এবং পূর্ণ শস্য সমৃদ্ধ খাবার খান। এতে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের জন্য ভালো।
- ভিটামিন সি: কমলালেবু, আঙ্গুর, স্ট্রবেরি, ব্রকলি, এবং বেল মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বককে টানটান এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ই: বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি, এবং অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। এটি এক ধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের কোষগুলিকে মুক্ত র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড: মাছ, আখরোট, এবং বীজে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এগুলি ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
চাপ কমান
মানসিক চাপ ত্বকের উপর নানারকম প্রভাব ফেলতে পারে। যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে চাপ কমান। চাপ ব্রণ, একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাগুলি আরও খারাপ করতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম
সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এটি বিষাক্ত পদার্থ বের করতে এবং ত্বকের কোষগুলিকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ
ধূমপান ও মদ্যপান ত্বকের ক্ষতি করে এবং বয়সের চিহ্ন তৈরি করে। ধূমপান ত্বকের কোলাজেন এবং ইলাস্টিন ভেঙে ফেলে, যার ফলে ঝিঁঝিঁপে ভাব এবং বলিরেখা দেখা দেয়। মদ্যপান ত্বককে শুষ্ক করে এবং রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে, যার ফলে লালচে ভাব এবং ফোলাভাব দেখা দেয়।
শেষ কথাঃ আশা করি মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির বেশকিছু উপায় জানতে পেরেছেন। মুখের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির আরও অনেক উপায় রয়েছে।
আপনি যদি সেগুলো সমন্ধে জানতে চান, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। আমরা রূপচর্চা নিয়ে আরও আর্টকেল প্রকাশ করবো। সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।