এলার্জি জাতীয় খাবারঃ কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে দেখুন তালিকা
খাদ্যে অ্যালার্জি একটি বর্ধমান সমস্যা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি একটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া যা নির্দিষ্ট খাবার বা তার উপাদান খাওয়ার পরে ঘটে।
লক্ষণগুলি হালকা থেকে তীব্র পর্যন্ত হতে পারে এবং এর মধ্যে চর্মের প্রতিক্রিয়া, শ্বাসকষ্ট, পেটের সমস্যা এবং এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিসও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
এলার্জি কেন হয়?
এলার্জি হলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া যা সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন কিছু জিনিসকে ক্ষতিকর ভেবে আক্রমণ করে। এই জিনিসগুলিকে অ্যালার্জেন বলা হয়।
এলার্জির হওয়ার প্রধান কিছু কারণ
- জিনগত: এলার্জির ঝুঁকি অনেকাংশে জিনগত। যদি আপনার পরিবারে এলার্জি থাকে, তাহলে আপনারও এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিকাশ: শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনও বিকশিত হচ্ছে এবং এটি কিছু পদার্থকে ভুল করে ক্ষতিকর বলে মনে করতে পারে। এর ফলে শিশুদের মধ্যে এলার্জি বেশি দেখা যায়।
- পরিবেশগত কারণ: আমাদের পরিবেশে এলার্জেনের সংস্পর্শে আসার ফলে এলার্জি হতে পারে। ধুলো, পরাগ, পোষা প্রাণীর পশম, ছত্রাক, এবং কিছু খাবার এলার্জির সাধারণ কারণ।
- ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ: ধূমপান, দূষণ, এবং অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এলার্জির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে
- গরুর দুধ: এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাদ্য অ্যালার্জি, তবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও এটি হতে পারে। গরুর দুধের প্রোটিন, যেমন ক্যাসিন এবং ল্যাকটোজ, অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী।
- চিনাবাদাম: চিনাবাদাম এবং অন্যান্য বাদাম (যেমন কাজু, বাদাম এবং আখরোট) খাদ্য অ্যালার্জির জন্য খুবই সাধারণ কারণ। বাদামের প্রোটিনগুলি অত্যন্ত অ্যালার্জেনিক হতে পারে এবং এমনকি ত্বকের সংস্পর্শে এলেও প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে।
- ডিম: ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম উভয়ই অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী হতে পারে। ডিমের অ্যালার্জি শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে অনেক ক্ষেত্রেই বয়সের সাথে সাথে এটি চলে যায়।
- শেলফিশ: চিংড়ি, কাঁকড়া, স্ক্যালপ এবং লবস্টার সহ শেলফিশ খাদ্য অ্যালার্জির জন্য একটি সাধারণ কারণ। শেলফিশের প্রোটিনগুলি খুবই স্থিতিশীল এবং রান্নার পরেও অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে।
- মাছ: স্যামন, টুনা এবং ম্যাকারেল সহ মাছ খাদ্য অ্যালার্জির জন্য আরেকটি সাধারণ কারণ। মাছের প্রোটিনগুলিও খুবই স্থিতিশীল এবং রান্নার পরেও অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে।
- গাছ বাদাম: বাদাম, আখরোট এবং পেস্তা সহ গাছ বাদাম খাদ্য অ্যালার্জির জন্য একটি সাধারণ কারণ। বাদামের প্রোটিনগুলি অত্যন্ত অ্যালার্জেনিক হতে পারে এবং এমনকি ত্বকের সংস্পর্শে এলেও প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে।
- সয়া: সয়া একটি বহুমুখী খাবার যা বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়। সয়াবিনের প্রোটিন খাদ্য অ্যালার্জির জন্য দায়ী হতে পারে।
- গম: গমের প্রোটিন, গ্লুটেন, সিলিয়াক রোগের পাশাপাশি খাদ্য অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। গ্লুটেন গম, বার্লি এবং রাই সহ শস্যের একটি প্রোটিন।
- চাল: চালের প্রোটিন কিছু লোকেদের মধ্যে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে। চালের অ্যালার্জি তুলনামূলকভাবে বিরল, তবে এটি যেকোনো বয়সে হতে পারে। এটি চালের প্রোটিন, যেমন অ্যালবুমিন এবং গ্লোবুলিনের প্রতি শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়।
উপরের তালিকা ছাড়াও আরও অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার কারণে অনেকের এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। নিচে এমন আরও বেশ কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এলার্জি জাতীয় খাবারের তালিকা
- সয়াবিন
- কুমড়া
- সরিষা
- তিল
- মটরশুটি
- সবুজ মটরশুটি
- আপেল
- গাজর
- আখরোট
- কাজু
- পেস্তা
- বাদাম
- চকোলেট
- কফি
- চা
- মধু
- মশলা
- টমেটো
- আলু
- গমের গ্লুটেন
- মেট্রো
- সয়াবিন
- কোকো
দ্রষ্টব্য: এই তালিকাটি সম্পূর্ণ নয় এবং যেকোনো খাবারে এলার্জি হতে পারে। আপনার যদি কোন খাবার খাওয়ার পরে কোনও প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হয় তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।